আমার শক্তির উৎস

 Image result for book

আমি যখন বিল গেটস এর জীবনি পড়ছিলাম, তখন জানতে পাড়লাম বিল গেটস মাঝেমধ্যে সময় পেলে বাইবেল পাঠ করেন।
বিল গেটস অতটা ধার্মিক নন কিন্তু উনি কেন যে বাইবেল পড়তেন বুঝতামনা। এছাড়া এন্ড্রু কার্নেগী, রকফেলার সহ অনেক সফল ব্যবসায়ী দের জীবনি পড়ে জানলাম তারা ধর্মগ্রন্থ পাঠ করতেন।
আমি বুঝতাম না,এরা কেন এসব পড়েন, তারা এত ব্যস্ত,এই সময় কোন ডকুমেন্ট পড়লে অথবা অর্থনীতি এর থিউরি পড়লে তো ভালো করতেন।
যাইহোক,কোয়ান্টামে আসার পড়,আমাদের শিক্ষক বললেন, বাংলা কোরআন পুরোটাই পড়তে হবে।
এটা শুনে পাড়লাম চিন্তায়, হায় আল্লাহ,আমি কেন বাংলায় পুরো কোরয়ান পড়তে যাবো। আমি মসজিদে ইমামতি করব না,এমনকি ওয়াজও করবোনা। পুড়ো কোরয়ান বাংলায় পড়ে আমার লাভটা কি?
যাই হোক,শিক্ষক যখন বলেছেন,তার কথা ফলো না করা বেয়াদবি হবে। শুরু করলাম পড়া।
প্রথম কয়েক পেজ কোনমতে পড়লাম,এরপর পেলাম হযরত মুসা (আঃ) এর ঘটনা।
ঘটনা পড়তে কার না ভালো লাগে,কিছু ঘটনা কিছু কথা এমন করতে করতে শেষ হলো কোরআনের সবচেয়ে বড় সুরা,সুরা বাকারা।
এই সুরা শেষ করার পড়,আমি এতবড় সুরা পড়েছি,সামনে এর চেয়ে বড় সুরা নেই।প্রতিদিন নিয়মিত পড়তে লাগলাম। অনেক সুরায় অনেক ঘটনা,যা আমাকে অবাক করতে লাগলো।কোরয়ানের অনেক বানি থেকে আমি আমার জীবনের অনেক উত্তর পেতে থাকলাম। এভাবে পড়তে পড়তে খতম দিলাম বাংলা কোরয়ান। খুব অবাক হলাম,ছোট বেলা থেকে কয়েকবার আরবিতে কোরয়ান শরিফ খতম দিয়েছি। কিন্তু কোরয়ান শরিফে যে এত ঘটনা আছে,এত ম্যাসেজ আছে বুঝতে পাড়িনি।
বাংলায় খতম দেবার পড় আবারো শুরু করলাম পড়া। বিল গেটস যদি নেপোলিয়ন বোনাপারট এর জীবনি ১৭ বার পড়তে পারে,আমি কেন এত দরকারি একটা গ্রন্থ ৪০ বার পড়তে পারবো না। আমি প্রতিদিন নিয়মিত পড়তে শুরু করলাম,যত খতম দিচ্ছি, ততই অনেক বিষয় আমার কাছে ক্লিয়ার হতে শুরু করেছে, জীবনটা ইজি হতে শুরু করেছে।
আমার খুব প্রিয় সাবজেক্ট অর্থনীতি। কিন্ত কোরয়ানের ভিতর এমন একটা আয়াত পেলাম,যা পুরো অর্থনীতি কে খুব সুন্দরভাবে এক বাক্যে তুলে ধরেছে।
এই গ্রন্থে বেশ কয়েক জায়গায় হযরত সোলাইমান আঃ এর ঘটনা আছে। এই নবীর অনেক জ্বিন ছিলো,যারা তার কাজ সহজে করে দিত,তথ্য মুহুরতের ভিতর এনে দিত।এই ঘটনা পড়ার পর আমার ভিতর একটা আকুতি জাগলো,ইস আমার যদি এমন জ্বিন থাকতো,যে আমার কাজ করবে,তথ্য এনে দেবে। সত্যিই আমার ভিতর একটা আকুতি তৈরি হলো। পড়ে আমার ভিতর স্ট্রাইক করলো। আরে ধুর জ্বিনের দরকার কি,আল্লাহ আমাদের ব্রেনে যা শক্তি দিয়েছেন,তা দিয়ে আমরা এমন একটা জিনিস তৈরি করেছি,যেটা থাকলে জ্বিনের দরকার নেই,সেটা হচ্ছে ইন্টারনেট। তখন আমার আগ্রহ বাড়লো এই ইন্টারনেটের উপর।কিন্তু আমি তখনো ইন্টারনেট ইউজার ছিলাম না।ইন্টারনেট তথ্যপ্রযুক্তি এসব এর উপর অজ্ঞই ছিলাম। এরপর সুরা বাকারার একটা আয়াতের ব্যাখ্যা থেকে আমার সেই শিক্ষক বললেন,আল্লাহ মানুষের ব্রেনে সব জ্ঞান দিয়ে রেখেছেন। বুঝতে পারলাম আমার ব্রেনে তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞান আছে,সেই জ্ঞানকে জাগ্রত করার জন্যে,একটা প্রযুক্তি এর উপর দক্ষতা বাড়াতে লাগলাম,ছোট খাট যা পারি জ্ঞান অরজন করতে লাগলাম। আমি বিস্মিত হলাম আমার দক্ষতা দেখে।
তথ্য প্রযুক্তির দক্ষতায় পরিচিতদের পিছে ফেলে এগিয়ে গেলাম।
আসলে ধর্মীয় জ্ঞান যে মানুষকে আধুনিক জীবনে উচু স্থানে নিয়ে যেতে পাড়ে তা আমার জানা ছিলোনা।
আমি যখনি কোন সমস্যায় পড়ি,বা যদি কেউ আমার কাছে বুদ্বি চায়,কিভাবে কিভাবে যেন ওই সমস্যা রিলেটেড আয়াত আমার মাথায় চলে আসে,সেই আয়াত অনুযায়ী এই যুগের আলোকে সমাধান দিতে পারি।
আসলে আমি চিরঋণী আমার শিক্ষক শ্রদ্বেয় গুরুজী শহিদ আল বোখারী এর কাছে,যিনি আমাকে তাগিদ না দিলে কখনই আমার কোরআন জানা হত না। জীবন যাপন করতে হত ভুল পথে,এতবড় স্বপ্ন বাস্তবায়নের শক্তি পেতাম না।
এতক্ষণ মনোযোগ দিয়ে এই লেখা পড়ার জন্যে আপনাদের ধন্যবাদ।
---------------------------------
তাজুল ইসলাম মাসুদ,
২রা মার্চ,২০১৬,
ঢাকা,বাংলাদেশ।

Comments

Popular posts from this blog

পথে নামলে পথই পথ দেখায়

মাওলানা ছায়ীদুল হকের আরেকটি পরিচয়

ক্যারিয়ার বান্ধব মেডিটেশন মনছবি