অালস্যে দুগর্তি, ব্যস্ততায় সুখ

Image result for busyness

(টপিক : অালস্যে দুগর্তি, ব্যস্ততায় সুখ এই লেখাটি আলোকায়ন কার্যক্রম নামের একটি প্রোগ্রামের জন্যে স্ক্রিপ্ট হিসেবে তৈরী করা হয়েছিলো। আমার লেখা এই স্ক্রিপ্টটা আজ এই ব্লগে পাব্লিশ করলাম।)
==========
[সালাম এবং সুচনা বক্তব্য]
প্রথমেই এই ব্যাপারে ধর্মীয় উক্তিগুলো আমরা জেনে নেই।
[প্লিজ add ধর্মীয় বাণী,  পয়েন্ট আলস্যের বিপক্ষে।]
আপনারা জেনেছেন ধর্ম অলসতার কুফল আর ব্যস্ততার সুফল এর ব্যাপারে ধর্ম যা যা বলেছে।
এখানে যারা এক আধটু অলস আছেন, তারা হয়তো ভাবছেন, এইরে শুরু হলো বুঝি আমাদের একেরপর এক দোষারোপ। ঘাবড়াবেননা। আমরা আজ কিছুটা অলসদের পক্ষই নেব। আমরা অধিকাংশই অলস খুব বাস্তব কিছু কারনে। সেগুলো আপনি ধরতে পারলে আপনিও নিজের অজান্তেই ব্যস্ত মানুষের তালিকায় নিজের নাম লেখাতে পারবেন।

ব্যস্ত আর অলসদের মধ্যে মজার মিল আছে।
মিলটা হচ্ছে, ব্যস্তরাও জানে " অালস্যে দুগর্তি, ব্যস্ততায় সুখ" আর অলসরাও জানে " অালস্যে দুগর্তি, ব্যস্ততায় সুখ"। 
৯৯% অলসরাই ব্যস্ততার গুরুত্ব বুঝতে পেরেও তারা ব্যস্ত থাকতে পারেনা। 
পরিশ্রম করতে হবে, ব্যস্ত থাকতে হবে। এমন ভাবার পরও আমরা অনেকেই আলস্য আর দীর্ঘসূত্রিতায় ডুবে যাই। জীবনে ডেকে আনি দুর্গতি। 
কেন আমরা অলস হই? অলস ক্ষতিকর এই তথ্য জানার পরও। নীচে দুটো পয়েন্ট উল্লেখ করছি। প্লিজ মনোযোগ দিয়ে শুনবেন। আশাকরি এই পয়েন্ট দুটো আপনাদের আজীবন মনে থাকবে। পয়েন্ট দুটো সহজ। 
১) প্রচন্ড আগ্রহের কাজ না করাঃ
আমরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেই কাজটাই বেছে নেই যেটার সমাজে খুব স্বীকৃত। কাজটা ভালোলাগা না লাগার তোয়াক্কা করিনা। এতে হয় কি? কাজটা করে মজা পাওয়া যায়না। একসময় বিরক্ত আসে। বিরক্তি থেকে কাজের প্রতি অনীহা আসে, আশানুরূপ সাফল্য না পেয়ে একধরনের আলস্য আর দীর্ঘসূত্রতায় আক্রান্ত হই। স্টিভ জবস খুব চমৎকার একটি কথা বলেছেন, "যতক্ষণ আপনি পছন্দনীয় কাজটা না পাচ্ছেন। ততক্ষণ কোনও কাজে স্থায়ী হতে যাবেননা।"
অনেকে সেলসম্যানের কাজটা করে। কারন এটা এমন একটা জব যেখানে একজন ডাক্তার ইঞ্জিয়ারের চেয়েও বেশি আয়ের সুযোগ থাকে। সেলসম্যান এমন একটি জব যেখানে প্রচুর না শুনতে। "না" "না" "না"......
এমনও হয় একটা "হ্যা" শোনার জন্যে ৯৯ টা "না" শুনতে হয়। কখনো কখনো ৯৯৯ টা "না" শোনার পরও সে "হ্যা" এর দেখা পায়না। "না" এর নিজস্ব একটা ধার আছে। এই ধার অনেকে নিতে পারেনা। আপনি যদি সেলসম্যানের কাজে প্রচণ্ড আগ্রহ না থাকে কখনওই এই কাজে স্থায়ী হবার চেষ্টা করবেননা।
আমাদের সমাজে অনেক গুনীজন আছেন। যাদের যে বিষয়ে আগ্রহ আছে, তারা ঝুকি নিয়ে সেই বিষয়ে ঝুকে পড়েছে।
আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার এবং মরহুম সৈয়দ শামসুল হক। তারা ফ্যামিলির কিছুটা বাধা সত্বেও সেই বিষয় নিয়ে পড়েছেন যাতে তাদের আগ্রহ আছে। আজ তারা সমাজে গুনীজন।
প্রচণ্ড আগ্রহের কাজে আলস্য আসেনা। আগ্রহের কাজ বেতন ছাড়াও দিনেরপর দিন প্রচুর করা যায়। 
ভাবুন,কোন কাজটায় আপনার প্রচণ্ড আগ্রহ আছে।
এরপরে ভাবুন। এই কাজটা দিয়ে আপনি কি সমাজের প্রয়োজন পূরণ করতে পারেন। এরপরে সেই কাজটাকে পেশাদারিত্বে রুপান্তর করুন। 
ধরুন কথারকথা আপনি শুধু ঝাড়ু দিতে পারেন। ঝাড়ু এবং পরিচ্ছন্নতাকে আপনি খুব ইঞ্জয় করেন। তাই বলে হতাশ হয়ে দিন পার করার কোনও প্রয়োজন নেই। ঝাড়ু দেয়াটা পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা প্রাকটিস করুন ভালোভাবে। যেসব সেবামুলক প্রতিষ্ঠান পরিচ্ছন্নতার কাজ করে তাদের সাথেও কাজ করুন। আমাদের কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনও এই পরিচ্ছন্নতার কাজটা করে। পাশাপাশি সুযোগ থাকলে ইউটিউব ভিডিও দেখেন, গুগলে সার্চ দেন। পরিচ্ছন্নতার উপরে এক্সপার্ট হন। এরপরে আপনি নিন্ম আয়ের পরিচিত  কিছু মানুষকে একত্রিত করে পরিচ্ছন্নতার উপরে হাতেকলমে কাজ দেখিয়ে দিন। 
এরপর আপনি চলে যান বড় কোন কোম্পানিতে। গিয়ে দেখা করেন, আসল লোকটির কাছে গিয়ে বলেন, "স্যার, আমাদের পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব দিয়ে দেখেন। এক ঘন্টার একটি পরীক্ষা নিয়ে দেখেন। আমি জানি আপনাদের এখানে পরিচ্ছন্ন টিম আছে। তারপরও একটা পরীক্ষা নিয়ে দেখেন। এখনই আমাদের কাজ দিতে হবেনা। কাজ দেখেন, ভালো লাগলে ভবিষ্যৎ এ আমাদের ডাকবেন।"
তারা যদি আপনার কাজ দেখতে চায়। আপনি আপনার টিম নিয়ে এসে পরিচ্ছন্ন করে ওদের অবাক করে দিলেন। এরপরে আপনারাই কাজ পেলেন। যা পাবেন, তার একটা পার্সেন্ট রেখে বাকিটা টিমে ভাগ করে দেবেন। এরপরে কি করবেন? চলে যাবেন ফাইভস্টার হোটেলে। ওখানে গিয়ে বলবেন, "আমার একটা টিম অমুক কোম্পানিতে পরিচ্ছন্নতার কাজ করে। আমাদের একটা সুযোগ দিয়ে দেখেন।"
তারা সুযোগ দিলে আপনার আরেকটা টিম যেটায় নতুনপুরানো মেশানো। সেটা দিয়ে কাজ আদায় করিয়ে নিলেন। ফাইভস্টারেও কাজ পেলেন। আমি বোঝাতে চাচ্ছি। আগ্রহ থাকলে আমরা ঝাড়ু দিয়েও লাখ টাকা ইনকাম করতে পারি।
আরে এমনিভাবে ভাবুন কোন কাজটা নিয়ে আপনি দিনেরপর দিন পড়ে থাকতে পারেন। হয়ত কেউ লজ্জায় বলবেন, "আমি সারাদিন চ্যাটিং করি।" এটাও হতে পারে চমৎকার গুন। আপনি চ্যাটিং অনেক করেন। অর্থাৎ আপনি মোবাইল টাইপিংয়ে বেশ দক্ষ। আপনি যেকোনো সাইটে কনটেন্ট রাইটার হিসেবে জয়েন করতে পারেন। আগে দেখতেন বিভিন্ন কোম্পানির নামের নীচে ঠিকানা। অর্থাৎ  বি কোম্পানি, ফার্মগেট ঢাকা। এরপরে দেখা গেলো, বি কোম্পানি, www b company dot com. এখন কি দেখা যায় f / b company. সুতরাং কনটেন্ট রাইটার হিসেবে আপনি কাজের অনেক সুযোগ পাবেন। ফেসবুকের কথা যখন আসলোই, একটা কথা মনে রাখবেন, মল হচ্ছে নিকৃষ্ট জিনিষ। কিন্তু সেই মলকে ঠিকভাবে কাজে লাগালে বায়োগ্যাস হতে পারে, সারও হতে পারে। আপনার ভালোলাগা যদি ফেসবুক হয়, তাহলে আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, ফেসবুককে আপনি আসমানি বালা হিসেবে ব্যবহার করে নিজের ক্ষতি করবেন। নাকি একে দিয়ে নিজের মেধাকে বিকশিত করবেন। ফেসবুক হচ্ছে বর্তমানে অত্যন্ত শক্তিশালী Two way media. এখন ওয়ান ওয়ে মিডিয়া তে, অর্থাৎ টিভি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন খরচ প্রায় প্রায় দশবারো লাখ ছাড়িয়ে যায়। তারপরও টার্গেটেড অডিয়েন্সের কাছে বিজ্ঞাপন যাবে কিনা তাও শিওর হওয়া যায়না। অনিশ্চিত। কিন্তু ফেসবুকে আপনি মাত্র ৩-৪ ডলার খরচ করেই বিজ্ঞাপন দিতে পারছেন। মোটামুটি নিশ্চিত থাকে টার্গেট অডিয়েন্স রিচ। ফেসবুকের ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ দিনকেদিন বাড়ছে। আমাদের দেশের মানুষ ইন্টারনেট মানেই বোঝে ফেসবুককে। ফেসবুকে বিশাল বড় একটি অডিয়েন্স। ফেসবুক আপনার আগ্রহ থাকলে আপনি ফেসবুক মার্কেটিং নিয়ে পড়াশুনা করতে পারেন। ফেসবুক মানেই শুধু ফেসবুক আইডি না। ফেসবুক মানে Event, Page এবং গ্রুপ এর মতো দরকারি সেগমেন্ট।  ইউটিউবে ট্রেনিং দেখতে পারেন ফেসবুক মার্কেটিং এর উপর। ফেসবুকের নিজস্ব পেজ আছে। সেগুলো নিয়মিত পড়তে পারেন।
আমাদের অলস থাকার কোনই সুযোগ নেই। যে কাজটা আপনি ইঞ্জয় করেন, সেটা নিয়েই পরিকল্পিতভাবে মেতে থাকুন। আপনার আনন্দটা সেবাতেও রুপান্তর হলো আয়ও বাড়লো এমনকি অলসতার অপবাদ থেকেও রেহাই পেলেন।
আপনি আপনার ভালোলাগার কাজকে পেশাদারীত্বে রুপান্তরের গুরুত্ব বুঝতে পেরেছেন। এখন অলস না থেকে শুরু করুন। শুরু করলে পথই পথ দেখিয়ে এগিয়ে নেবে। আগ্রহের কাজ শুরু করলে অলস থাকার সুযোগ পাবেনই না।
"A journey of a thousand miles starts with that first step. If you look ahead to the end, and all the weary miles between, with all the dangers you might face, you might never take that first step. And wherever it is you want to achieve in life, if you don't make the effort, you won't reach your goal. So take that first step. There will be many challenges. You might get knocked back - but in the end, you will make it."
-Sir Richard Branson,
Book: Screw it, Let's do it.
Page no: Chapter Introduction/ x-ix
এগিয়ে যান। লাভবান হবেন।

২) দুই পায়ে না হেটে এক পায়ে হাটার চেষ্টা করিঃ
এক পায়ে লাফানো যায়। কিন্তু হাটতে হলে আপনার দুই পা লাগবে। এক পায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে এগুতে যান। একসময় ক্লান্ত বিরক্ত হয়ে অলসতা চলে আসবে। এক পায়ে যেমন আগানো যায়না। দুই পা লাগে। তবে পা না থাকলে কৃত্রিম পা দিয়ে অথবা ক্রাচ দিয়ে হলেও এগুতে হয়। ঠিক তেমনি আপনার সামনে এগুতে হলে দুটো গুন লাগবেই। মোটিভেশন আর স্কিল।
মোটিভেশন আর স্কিলের জন্যে আপনাকে প্রচুর জ্ঞানার্জন করতে হবে, চর্চা করতে হবে। তবে জ্ঞানার্জনের আগে প্রয়োজন আপনার চেতনাকে একটি ফরমেটে আনা। চেতনাকে সমৃদ্ধ করা।
এরজন্যে কি করবেন? কোয়ান্টাম মেথড কোর্সটা করে ফেলুন। কোয়ান্টাম মেথড কোর্সের মাধ্যমে সমৃদ্ধ হবে আপনার চেতনা। আমি প্রচণ্ড মটিভেশনও পাবেন। দক্ষ হবার কিছু দিকনির্দেশনাও পাবেন। আলোকায়নে আসলেও আপনি জ্ঞান পাবেন। তবে এইজ্ঞান খণ্ডিত। খণ্ডিত জ্ঞানের চেয়ে কম্প্যাক্ট জ্ঞানের শক্তি বেশি। কোর্স করুন। চেতনাকে সমৃদ্ধ করুন। আপনার চেতনা সমৃদ্ধ করার পর আপনি আগের চেয়ে ভালো বুঝতে পারবের কোনটা সঠিক কোনটা ভুল। এবার আপনি মটিভেটেট আর দক্ষ হবার জন্যে জ্ঞানার্জনে ঝাপিয়ে পড়ুন।
Sir Richard Branson খুব সুন্দর এক কথা সবসময় মনে রাখবেন। "Listen. Take the best, leave the rest." যেহেতু আপনার চেতনা সমৃদ্ধ, আপনার পক্ষে ভালোটা গ্রহণ করার, ভুলটা বর্জন করার শক্তি আছে। ধরুন আপনি Walter Isaacson রচিত  Steve Jobs এর জীবনী পড়ছেন। একটা জায়গায় আপনি পাবেন স্টিভ জবস গাজা খেতেন। আপনার চেতনা সমৃদ্ধ না হলে আপনার মাথায় আসবে,"ওও জবস গাঞ্জা খাইতো। আমিও খামু। গাঞ্জা খাইয়া ক্রিয়েটিভিটি বাড়ামু।" কিন্তু আপনার চেতনা সমৃদ্ধ হবার কারনে। আপনি গাজা খাওয়ার বিষয়টা আমলে না নিয়ে Leave the rest এ ফেলে দিলেন। আপনি স্টিভ জবসের বইতেই পেলেন জবস তার ব্যবসায়ে মনোযোগী ছিলেন। তিনি কাস্টমারের হাতে উন্নতমানের পন্য দিতেন। এখন এই পয়েন্টগুলো আপনার চেতনার সাথে যায়। আপনি একে Take the best ক্যাটাগরিতে ফেলে নোট নিলেন।
শুধু স্কিল পাওয়ার দিয়ে এগুনো যায়না। মোটিভেশন পাওয়ার প্রয়োজন। তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে মহাভারত এর ঘটনা।
অর্জুন অনেক দক্ষ ছিলো। অসাধারণ তীরন্দাজ এবং সমর কৌশল জ্ঞান ছিলো। যা দিয়ে যুদ্ধে জেতা সম্ভব। কিন্তু ছিলোনা যুদ্ধ করার মোটিভেশন।
যুদ্ধের শুরুর আগে অর্জুনের শিথিলতা দেখে শ্রী কৃষ্ণ জিজ্ঞেস করলো, কি হয়েছে অর্জুন? অর্জুন যুদ্ধে অনীহার কথা জানালো। এরপরে যুদ্ধের জন্যে কৃষ্ণ অর্জুনকে মোটিভেটেড করতে লাগলো। শ্রী কৃষ্ণ আর অর্জুনের এই কথোপকথনই কিন্তু শ্রীমদ্ভগবত গীতা। গীতায় আঠারোটা অধ্যায়। প্রথম অধ্যায়ে অর্জুন বলেছে। কৃষ্ণ শুনেছে, মনোযোগ দিয়ে শুনেছে। বাকি সতেরটা অধ্যায়ে অর্জুন শুনেছে আর শ্রী কৃষ্ণ বলে গিয়েছে। অর্থাৎ বাকি সতেরটা অধ্যায়ই ছিলো Motivation, Motivation & Motivation. কোয়ান্টাম মেথড কোর্সে আপনি অসাধারণ মোটিভেটেড হবেন। এরপরে ইতিবাচক বই পড়ুন। সফলদের জীবনী পড়ুন। ইন্টারনেট থাকলে ব্লগ পড়ুন। তবে যতটা পারেন বই পড়ার চেষ্টা করবেন। বইতে পুর্নাঙ্গ জ্ঞানের ফ্লেভার পাবেন, যেটা ব্লগে পাবেননা। ব্লগ আর সাইটের জ্ঞান খণ্ডিত।
মোটিভেশন হলেন এখন যদি স্কিল অথবা দক্ষতার জ্ঞান না থাকে তাহলে একসময় থেমে যাবেন। অলসতায় অথবা দীর্ঘসূত্রিতায় তলিয়ে যাবেন। একজন ব্যবসায়ীর উদাহরণ দিচ্ছি। উনি ব্যবসা করে যাচ্ছেন। কিন্তু ব্যবসায় আশানুরূপ ফল পাচ্ছেন না। হতাশ হয়ে গেলেন। উনি মোটিভেশন প্রোগ্রামে এটেন্ড করলেন। খুব মনের জোড় পেলেন। আবার উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে আবার শুরু করলেন। কিন্তু কিছুদিন পর আবারও ধরা। আবার উনি মটিভেশনাল কোর্স করলেন, রিপিট করলে। উৎসাহ পেলেন, আবার ব্যবসায়ের হাল ধরলেন। আবার ধরা খেলেন। এখন উনি ব্যবসা বাদ দিয়ে একটি সেবামুলক প্রতিষ্ঠানে মিশনারি হিসেবে জয়েন করলেন। আমি মিশনারিকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু এই ঘটনাটা উল্লেখ করলাম এই কারনে, সেই ব্যবসায়ী ব্যবসায়ের প্রাথমিক দক্ষতার দিকটা অবহেলা করেছে। সে ভেবেছিলো মোটিভেশনই তাকে ব্যবসায়ে এগিয়ে নেবে। যখন উনি ব্যবসা করছিলেন তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো,"আপনি কি ফিলিপ কার্টলার এর Marketing Management বইটা পড়েছেন?" উনি তখন বোঝালেন এই বইটা পড়তে উনি আগ্রহী নন। আরে বাংলাদেশের বড়বড় ব্যবসায়ীর কথা বাদ দেন। ফুটপাতের অনেক ব্যবসায়ী পাবেন, খুজলে হকারও পাবেন, যারা  ফিলিপ কার্টলারের Marketing Management বইটা পড়েছে নয়তো ঘাটাঘাটি করেছে। রাস্তাঘাটে একটা কথা প্রায়শই শোনা যায়, "তিনশ টাকার এনার্জি লাইট মাত্র ১০০ টাকায়। শুধুমাত্র কোম্পানির প্রচারের জন্যে।" 
কথাটা কে কে শুনেছেন হাত তোলেন!
[অডিয়েন্সের দিকে চোখ বুলানো]
ওয়াও! অনেকেই আছেন। 
"তিনশ টাকার এনার্জি লাইট মাত্র ১০০ টাকায়। শুধুমাত্র কোম্পানির প্রচারের জন্যে।" এই কথাটা সেই ব্যবসায়ী যিনি মিশনারি হিসেবে জয়েন করেছে, উনি যদি শোনেন, তার কাছে মনেহবে এটা নেহায়েত ক্যানভাসারদের ক্যাঁচক্যাঁচানি। কিন্তু উনি যদি Marketing Management বইটা পড়তেন। উনি বুঝতেন, এই মাত্র একটা লাইনের ভিতরই সুপ্ত আছে মার্কেটিং এর বেশ কিছু শক্তিশালী সুত্র। আপনি হয়ত ভাবছেন,এই এনার্জি লাইটের কথাগুলো, এমনকি ফুটপাতের মলম বিক্রির সস্তা কথাগুলো ফুতপাতের ব্যবসায়ীরা সাজিয়েছে। আরে না। সাজিয়েছে দক্ষ মেধাবী মার্কেটিং শিক্ষিত লোকগুলো। তারা জানে মলম কিনবে কারা, কোন শ্রেণী লোক। কি বললে তাদের মনোযোগ পাবে। সেভাবেই কথাগুলো সাজিয়েছে। তারা মার্কেটিং এ দক্ষ হয়েও ব্যবসায়ে হিমশিম খাচ্ছে। আর আপনি দক্ষ না হয়েই সাফল্য চাচ্ছেন। হবে? হবেনা।
আপনারা অনেকেই কিউট কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা মরহুম কাজী মাহতাব আহমেদ এর নাম শুনেছেন।  আপনারা কি জানেন He was a marketing genius. তখন সবাই টিভির বিজ্ঞাপনের দিকে বিশাল বিশাল বিনিয়োগ করতো। উনি টিভি বিজ্ঞাপনে অতটা খরচ করতেননা। উনি একটা মাইক্রোবাস নিয়ে চলে যেতেন   ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে। সেইসব ডিলারদের সাথে দেখা করতেন, যারা তার পণ্য বিক্রি করতো।
ডিলারদের সাথে কথা বলতো। একসাথে তাদেরসাথে ছোট্ট অফিসে অথবা গোডাউনে তাদের সাথে বসে খাবারও খেত। ডিলাররা ভাবতো, "এতবড় কোম্পানির মালিক হয়েও আমাদের খোঁজখবর নেয়, আমাদের সাথে খাবার খায়, আমরা এর পণ্য বিক্রি করবোনাতো কার পণ্য বিক্রি করবো।"
মাহতাব আংকেল এর এই কার্যক্রমেই বোঝা যায় উনি কতটা দক্ষ।
আপনি যদি কোনও কাজে দক্ষ হোন। আপনি চাইলেও আপনি অলস সময় কাটাতে পারবেন না। প্রকৃতি আপনাকে ধাক্কিয়ে কাজে ফেলে দেবে। ধরুন একজন দক্ষ টিভির মিস্ত্রী। সে ঠিক করলো। আজ সে কাজই করবেনা। বাসায় গিয়ে অলস সময় কাটাবে। চলে গেলো বাসায় অলস সময় কাটাতে। কিন্তু সে অলস সময় কাটাতে পারবেনা। বাড়িতে লোক এসে পড়বে। "ভাই আপনি কই? আমার টিভিটা ঠিক করে দেন, বাসায় আজ মেহমান আসবে।"
আপনি হয়তো না করে দিলেন। এরপরে মহল্লার সিনিয়র কেউ ফোন করে বলবে, "কি ব্যাপার ওর টিভিটা ঠিক করে দে। ওর বাসায় বিকেলে মেহমান আসবে। এমন করিস কেন!"
তখন কি আর করা? টিভি নিয়ে বসা ছাড়া উপায় নেই। অলস সময় সে আর কাটাতে পারলোনা।
এখন দক্ষতা বৃদ্ধির অনেক সুযোগ আছে। আপনার হাতেই আছে স্মার্টফোন। এখন এই ফোন শয়তানের ছোট বাক্স হবে নাকি সুপার কম্পিউটার হবে, সেটা আপনার উপর ডিপেন্ড করবে। আপনি যে বিষয়ে দক্ষ হতে চান, সেই বিষয়ে ইউটিউবে প্রচুর ট্রেনিং ভিডিও সেশন আছে। সেগুলো যেভাবেই পারেন কম্পিউটারে অথবা মোবাইলে ডাউনলোড করে দেখুন। প্রাকটিস করুন। 
এতক্ষণ আলোচনা শোনার জন্যে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
=============
[কিভাবে অলসতা দূর করা যায় মুলত সেই বিষয়ে ফোকাস করেছি।  ] 
তাজুল ইসলাম মাসুদ,

(আজই জমা দেবার শেষদিন ছিলো। শোকর আলহামদুলিল্লাহ, আজই পাঠাতে পারলাম।)

Tazul Islam Masud,
Entrepreneur,
Founder of "Time 2025"

Comments

Popular posts from this blog

পথে নামলে পথই পথ দেখায়

ক্যারিয়ার বান্ধব মেডিটেশন মনছবি

মাওলানা ছায়ীদুল হকের আরেকটি পরিচয়