কোয়ান্টাম জালালি প্রোগ্রামে নিয়মিত হন
প্লিজ জালালি প্রোগ্রাম মিস দেবেন না
===================
(এক)
আমি কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট থাকাকালীন কখনই প্রজ্ঞা জালালি মিস দিতামনা।
একবার আমার মাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলো, বোন-টিবির জন্যে। হাসপাতালে ভর্তির পর নানা সমস্যা দেখা দিলো, বড় সমস্যা ছিলো হাসপাতাল ভয়াবহ কমার্শিয়াল আচরন করতে শুরু করলো। পানির মতো টাকা খরচ হচ্ছে। এরমধ্য প্রজ্ঞা জালালির দিন চলে আসলো, আমি এবার ভাবতে লাগলাম, "থাক প্রতিবারইতো প্রজ্ঞা জালালিতে যাই, এইবার না হয় মিস দেই, মায়ের পাশেই থাকি, মায়ের সেবা করি। এটাইতো অনেক বড় ইবাদত।"
অর্থাৎ মোটামুটি ঠিক করে ফেললাম, এবার মনে হয় যাচ্ছিনা প্রজ্ঞা জালালি প্রোগ্রামে।
প্রজ্ঞা জালালি প্রোগ্রাম যেদিন হবে, সেদিন ভোরে খবর পেলাম আম্মার ব্যাথাটা অনেক বেড়েছে। আম্মার কাছে আমার বোন থাকে, ছোট খালা থাকে। আব্বা হাসপাতালে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো, আমি আব্বাকে বললাম, "আমি প্রজ্ঞা জালালিতে যাচ্ছি।"
আব্বা কিছুটা আহত হলেন, বললেন,"আজ না গেলে হয়না?"
আমি আব্বাকে বললাম, "না আমাকে যেতেই হবে।"
আমার সিদ্ধান্ত চেঞ্জ করলাম, কারন যখন শুনলাম আম্মার ব্যাথাটা বেড়েছে তখন ভাবলাম, আমি প্রজ্ঞা জালালিতে যাবো, ওখানে সবাই মিলে সম্মিলিতভাবে শক্তিশালী দোয়া হয়। সবাই স্রস্টার কাছে অন্তরের অন্তস্থঃতল থেকে প্রার্থনা করে, আমি প্রার্থনা করবো আম্মার জন্যে। আল্লাহর কাছে চাইবো, আল্লাহ অবশ্যই আমার মাকে সুস্থ করে দেবেন।
আর হাসপাতালে আমার বোন আছে, (ও জগন্নাথের ছাত্রী, যার কাছেই হাসপাতাল, সে অনেক বুদ্ধিমতী এবং সাহসী), সেই সাথে আব্বা আছে খালা আছে।
পর্যাপ্ত টাকাও আছে, সুতরাং সন্ধ্যা পর্যন্ত আমার অনুপুস্থিতি তেমন সমস্যা হবেনা।
===================
(এক)
আমি কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট থাকাকালীন কখনই প্রজ্ঞা জালালি মিস দিতামনা।
একবার আমার মাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলো, বোন-টিবির জন্যে। হাসপাতালে ভর্তির পর নানা সমস্যা দেখা দিলো, বড় সমস্যা ছিলো হাসপাতাল ভয়াবহ কমার্শিয়াল আচরন করতে শুরু করলো। পানির মতো টাকা খরচ হচ্ছে। এরমধ্য প্রজ্ঞা জালালির দিন চলে আসলো, আমি এবার ভাবতে লাগলাম, "থাক প্রতিবারইতো প্রজ্ঞা জালালিতে যাই, এইবার না হয় মিস দেই, মায়ের পাশেই থাকি, মায়ের সেবা করি। এটাইতো অনেক বড় ইবাদত।"
অর্থাৎ মোটামুটি ঠিক করে ফেললাম, এবার মনে হয় যাচ্ছিনা প্রজ্ঞা জালালি প্রোগ্রামে।
প্রজ্ঞা জালালি প্রোগ্রাম যেদিন হবে, সেদিন ভোরে খবর পেলাম আম্মার ব্যাথাটা অনেক বেড়েছে। আম্মার কাছে আমার বোন থাকে, ছোট খালা থাকে। আব্বা হাসপাতালে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো, আমি আব্বাকে বললাম, "আমি প্রজ্ঞা জালালিতে যাচ্ছি।"
আব্বা কিছুটা আহত হলেন, বললেন,"আজ না গেলে হয়না?"
আমি আব্বাকে বললাম, "না আমাকে যেতেই হবে।"
আমার সিদ্ধান্ত চেঞ্জ করলাম, কারন যখন শুনলাম আম্মার ব্যাথাটা বেড়েছে তখন ভাবলাম, আমি প্রজ্ঞা জালালিতে যাবো, ওখানে সবাই মিলে সম্মিলিতভাবে শক্তিশালী দোয়া হয়। সবাই স্রস্টার কাছে অন্তরের অন্তস্থঃতল থেকে প্রার্থনা করে, আমি প্রার্থনা করবো আম্মার জন্যে। আল্লাহর কাছে চাইবো, আল্লাহ অবশ্যই আমার মাকে সুস্থ করে দেবেন।
আর হাসপাতালে আমার বোন আছে, (ও জগন্নাথের ছাত্রী, যার কাছেই হাসপাতাল, সে অনেক বুদ্ধিমতী এবং সাহসী), সেই সাথে আব্বা আছে খালা আছে।
পর্যাপ্ত টাকাও আছে, সুতরাং সন্ধ্যা পর্যন্ত আমার অনুপুস্থিতি তেমন সমস্যা হবেনা।
(দুই)
প্রজ্ঞা জালালি প্রোগ্রামে যাবার জন্যে যখন বাসে উঠলাম, তখন থেকেই আল্লাহ এর কাছে আম্মার জন্যে দোয়া চাওয়া শুরু করলাম।
ওখানে গিয়ে পরিচিত কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েটদেরও বললাম, আমার আম্মার জন্যে দোয়া করবেন।
আমাদের প্রজ্ঞাবান শিক্ষক আসলেন শুরু করলেন প্রোগ্রাম, প্রোগ্রামের শুরুতেই যথারীতি প্রজ্ঞা আর্জনের উপায় গুলো নিয়ে আলোচনা করলেন, কিছু প্রশ্নের উত্তর দিলেন। দুপুরের জোহর নামাজের বিরতির পর শুরু হলো দোয়ার প্রোগ্রাম। আমরা হাজার দেড়েক কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট আল্লাহএর কাছে কান্নাকাটি করলাম। আল্লাহ এর কাছে চাইলাম। আমি আমার আম্মার সুস্থতার জন্যে হৃদয়ের গভীর থেকে প্রার্থনা করলাম।
চমৎকার ছিলো প্রজ্ঞা জালালির প্রোগ্রাম।
প্রজ্ঞা জালালি প্রোগ্রামে যাবার জন্যে যখন বাসে উঠলাম, তখন থেকেই আল্লাহ এর কাছে আম্মার জন্যে দোয়া চাওয়া শুরু করলাম।
ওখানে গিয়ে পরিচিত কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েটদেরও বললাম, আমার আম্মার জন্যে দোয়া করবেন।
আমাদের প্রজ্ঞাবান শিক্ষক আসলেন শুরু করলেন প্রোগ্রাম, প্রোগ্রামের শুরুতেই যথারীতি প্রজ্ঞা আর্জনের উপায় গুলো নিয়ে আলোচনা করলেন, কিছু প্রশ্নের উত্তর দিলেন। দুপুরের জোহর নামাজের বিরতির পর শুরু হলো দোয়ার প্রোগ্রাম। আমরা হাজার দেড়েক কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট আল্লাহএর কাছে কান্নাকাটি করলাম। আল্লাহ এর কাছে চাইলাম। আমি আমার আম্মার সুস্থতার জন্যে হৃদয়ের গভীর থেকে প্রার্থনা করলাম।
চমৎকার ছিলো প্রজ্ঞা জালালির প্রোগ্রাম।
প্রোগ্রাম শেষে আমি হাসপাতালে রওনা দিলাম, আমার মোবাইলে ব্যাটারি চার্জ শেষ, ফোন বন্ধ। তাই হাসপাতালে গিয়েই খবর নিতে হবে।
হাসপাতালে গিয়ে একাধিক সুখবর পেলাম। (শোকর আলহামদুলিল্লাহ)।
আম্মার ব্যাথা অনেক অনেক কমেছে। ওই হাসপাতালে এমন একজন কর্মচারী এর সন্ধান পাওয়া গেলো, যিনি আমাদের আত্মীয়, এখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের সাথে কমার্শিয়াল আচরনের বদলে আত্মীয়সুলভ আচরণ করতে লাগলো। এবং আমাদের অপ্রয়োজনীয় টেস্ট ও অন্যন্য অপ্রয়োজনীয় খরচ আর করতে হলোনা।
আম্মাকে পরদিনই রিলিজ দেয়া হলো।
হাসপাতালে গিয়ে একাধিক সুখবর পেলাম। (শোকর আলহামদুলিল্লাহ)।
আম্মার ব্যাথা অনেক অনেক কমেছে। ওই হাসপাতালে এমন একজন কর্মচারী এর সন্ধান পাওয়া গেলো, যিনি আমাদের আত্মীয়, এখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের সাথে কমার্শিয়াল আচরনের বদলে আত্মীয়সুলভ আচরণ করতে লাগলো। এবং আমাদের অপ্রয়োজনীয় টেস্ট ও অন্যন্য অপ্রয়োজনীয় খরচ আর করতে হলোনা।
আম্মাকে পরদিনই রিলিজ দেয়া হলো।
(তিন)
এই ঘটনার আগেতো জালালি প্রোগ্রাম মিসতো দিতামই না, এই ঘটনার পরও মিস দেয়ারও প্রশ্নও আসতোনা।
আমি একবার বিদেশ যাবার সুযোগ পেয়েছিলাম, বড় দেশ, উন্নত দেশ। কিন্তু যাইনি। কারন বিদেশে সব আছে, কিন্তু আমার শিক্ষকের জালালি প্রোগ্রাম নেই।
গত ডিসেম্বরে আমার কিডনিতে ইনফেকশন ধরা পড়লো। নড়াচড়া করলেই ব্যাথায় কুঁকড়ে উঠতাম। ডিসেম্বর এ তখন সজ্ঞা জালালির প্রোগ্রামের ডেট চলে এলো (আমি এখন প্রোমাস্টার, প্রোমাস্টারদের জন্যে আমাদের শিক্ষকের সজ্ঞা জালালি প্রোগ্রাম, যখন শুধু কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট ছিলাম তখন আমাদের "প্রজ্ঞা জালালি" প্রোগ্রাম করতে হতো।)
এত ব্যাথা নিয়ে সজ্ঞা জালালিতে কিভাবে যাওয়া যায়?
যতই ব্যাথা হোক আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, এম্বুলেন্সে করে হলেও "সজ্ঞা জালালি" প্রোগ্রামে যাবো।
যাইহোক এম্বুলেন্স আমার লাগেনি, গাড়িতে করেই গেলাম। সজ্ঞা জালালি প্রোগ্রাম করলাম।
সুস্থতা ফিল করলাম। আমার বাসা গেণ্ডারিয়া। কাকরাইল থেকে গেণ্ডারিয়া আসলাম। কিসে চড়ে? এম্বুলেন্স? সিএনজি? বাস? রিক্সা? কিসে চড়েনা, কাকরাইল থেকে গেণ্ডারিয়া এসেছি পায়ে হেটে। (শোকর আলহামদুলিল্লাহ।)
এই ঘটনার আগেতো জালালি প্রোগ্রাম মিসতো দিতামই না, এই ঘটনার পরও মিস দেয়ারও প্রশ্নও আসতোনা।
আমি একবার বিদেশ যাবার সুযোগ পেয়েছিলাম, বড় দেশ, উন্নত দেশ। কিন্তু যাইনি। কারন বিদেশে সব আছে, কিন্তু আমার শিক্ষকের জালালি প্রোগ্রাম নেই।
গত ডিসেম্বরে আমার কিডনিতে ইনফেকশন ধরা পড়লো। নড়াচড়া করলেই ব্যাথায় কুঁকড়ে উঠতাম। ডিসেম্বর এ তখন সজ্ঞা জালালির প্রোগ্রামের ডেট চলে এলো (আমি এখন প্রোমাস্টার, প্রোমাস্টারদের জন্যে আমাদের শিক্ষকের সজ্ঞা জালালি প্রোগ্রাম, যখন শুধু কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট ছিলাম তখন আমাদের "প্রজ্ঞা জালালি" প্রোগ্রাম করতে হতো।)
এত ব্যাথা নিয়ে সজ্ঞা জালালিতে কিভাবে যাওয়া যায়?
যতই ব্যাথা হোক আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, এম্বুলেন্সে করে হলেও "সজ্ঞা জালালি" প্রোগ্রামে যাবো।
যাইহোক এম্বুলেন্স আমার লাগেনি, গাড়িতে করেই গেলাম। সজ্ঞা জালালি প্রোগ্রাম করলাম।
সুস্থতা ফিল করলাম। আমার বাসা গেণ্ডারিয়া। কাকরাইল থেকে গেণ্ডারিয়া আসলাম। কিসে চড়ে? এম্বুলেন্স? সিএনজি? বাস? রিক্সা? কিসে চড়েনা, কাকরাইল থেকে গেণ্ডারিয়া এসেছি পায়ে হেটে। (শোকর আলহামদুলিল্লাহ।)
(চার)
এই ঘটনাদুটোর কারন কি? কারনটা আমি ব্যাখ্যা করতে পারবোনা। তবে আমার শিক্ষকের বইয়ের একটা অংশ এখানে তুলে ধরছি।
"প্রার্থনা সকল ইবাদতের নির্যাস। প্রার্থনার সময় মনে করুন, অনুভব করুন, সর্বশক্তিমান আল্লাহর সামনে আপনি সেজদায় পড়ে আছেন। তিনি আপনাকে দেখছেন, আপনার সব কথা শুনছেন।
প্রার্থনায় আপনার হৃদয় নিংড়ানো সকল আকুতি অবলীলায় প্রকাশ পেতে দিন। ভুলে যান অন্য সবকিছু। শুধু অনুভব করুন করুণাময়ের করুণাকে, দয়াকে আর আপনার চাওয়াকে। অনুভব করুন প্রার্থনা কবুল হয়ে গেছে।
কারন প্রার্থনা কবুলকারীর সাথে প্রার্থনাকারী একাকার হয়ে গেলে না পাওয়ার কিছুই থাকেনা।...... "
(অধ্যায় আসুন প্রার্থনা করি-২, গ্রন্থ: কোয়ান্টাম কনিকা)।
এই ঘটনাদুটোর কারন কি? কারনটা আমি ব্যাখ্যা করতে পারবোনা। তবে আমার শিক্ষকের বইয়ের একটা অংশ এখানে তুলে ধরছি।
"প্রার্থনা সকল ইবাদতের নির্যাস। প্রার্থনার সময় মনে করুন, অনুভব করুন, সর্বশক্তিমান আল্লাহর সামনে আপনি সেজদায় পড়ে আছেন। তিনি আপনাকে দেখছেন, আপনার সব কথা শুনছেন।
প্রার্থনায় আপনার হৃদয় নিংড়ানো সকল আকুতি অবলীলায় প্রকাশ পেতে দিন। ভুলে যান অন্য সবকিছু। শুধু অনুভব করুন করুণাময়ের করুণাকে, দয়াকে আর আপনার চাওয়াকে। অনুভব করুন প্রার্থনা কবুল হয়ে গেছে।
কারন প্রার্থনা কবুলকারীর সাথে প্রার্থনাকারী একাকার হয়ে গেলে না পাওয়ার কিছুই থাকেনা।...... "
(অধ্যায় আসুন প্রার্থনা করি-২, গ্রন্থ: কোয়ান্টাম কনিকা)।
আমরা যারা কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট আছি তারা "প্রজ্ঞা জালালি" (যা প্রতিমাসের প্রথম বুধবার হয়)। আর যারা কোয়ান্টাম প্রোমাস্টার আছি তারা "সজ্ঞা জালালি" সুযোগ থাকা সত্বেও মিস দেবেননা। আসলে আপনারই উপকার হবে। অনেকে ঢাকার বাইরে থাকেন অনেক কস্ট করে আসেন। ঢাকার বাইরে থাকে কেউ কেউ আসতে পারেন না, তারা খুব আফসোস করেন। আপনি ঢাকায় থেকেও যদি অবহেলা করে প্রোগ্রাম মিস করেন, এরচেয়ে অভাগা আর কি হতে পারে।
আমার জন্যে দোয়া করবেন, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমার কোনও সজ্ঞা জালালি যেন মিস না যায়। শোকর আলহামদুলিল্লাহ, এখন পর্যন্ত আমার কোনও "সজ্ঞা জালালি" মিস যায়নি।
ধন্যবাদ।
-----------------------------
তাজুল ইসলাম মাসুদ,
১৮ই এপ্রিল, ২০১৭,
ঢাকা, বাংলাদেশ।
আমার জন্যে দোয়া করবেন, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমার কোনও সজ্ঞা জালালি যেন মিস না যায়। শোকর আলহামদুলিল্লাহ, এখন পর্যন্ত আমার কোনও "সজ্ঞা জালালি" মিস যায়নি।
ধন্যবাদ।
-----------------------------
তাজুল ইসলাম মাসুদ,
১৮ই এপ্রিল, ২০১৭,
ঢাকা, বাংলাদেশ।
Comments
Post a Comment